নিয়োগ দুর্নীতিতে নোবেলজয়ীদের পর্যবেক্ষণ জানতে চান বিচারপতি

নিয়োগ দুর্নীতিতে অমর্ত্য সেন (Amartya Sen), অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতামত জানতে কৌতূহলী বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। - অলঙ্করণ: সুবর্ণরেখা টিম

নিজস্ব প্রতিবেদন:

এবার নিয়োগ দুর্নীতিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) মত জানতে চাইলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। জানতে চান আরেক নোবেলজয়ী বাঙালি অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতামতও। নিজের এজলাসেই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টচার্যের সঙ্গে কথোপকথনের সময় নিজের কৌতূহল প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) নিয়ে অমর্ত্যর সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে বিচারপতির এমন আগ্রহ বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

বুধবার হাইকোর্টে নিজের এজলাসে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় আচমকাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘ওঁরা তো অনেক বিষয়েই নানা মন্তব্য করেন। আমাক কৌতূহল, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই সব মহান স্বীকৃত শিক্ষাবিদদের পর্যবেক্ষণ কী?’’ আলাপচারিতায় বিচারপতি আরও বলেন, স্কুলে নিয়োগে এত বড় দুর্নীতি হল। নোবেলজয়ীরা কী বলছেন? অমর্ত্য সেন রয়েছেন। তিনি প্রতীচী ট্রাস্ট গড়ে কাজ করেছেন। অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। এই সব মহান স্বীকৃত শিক্ষাবিদদের পর্যবেক্ষণ কী? 

অমর্ত্য সেন সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারে মন্তব্য করেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর তুঙ্গে। বিজেপি যেমন অমর্ত্যকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছে, পাল্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পর্যেবক্ষণকে হাতিয়া করে আসরে নেমেছে তৃণমূলও। অমর্ত্যর ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ সরাসরি না টেনেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই বিষয়টিই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন আইনজ্ঞ এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। 

নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। অনেকের চাকরি খোয়া গিয়েছে তাঁর নির্দেশে। শুনানি চলাকালীন সাম্প্রতিক সামাজিক ও রাজনীতির নানা বিষয় নিয়ে তাঁর মন্তব্য বিভিন্ন সময়ে নানা জল্পনা, কৌতূহলের উদ্রেক করেছে। বিশ্বকাপ চলাকালীন যেমন আর্জেন্টিনার জার্সি নীল সাদা এবং ব্রাজিলের সবুজ-হলুদ জার্সি নিয়ে মন্তব্য করেন। নীল সাদা বলতে আসলে তৃণমূলকেই খোঁচা দিতে চেয়েছিলেন বলে মনে করেন অনেকে। এবার চর্চার কেন্দ্রে থাকা দুই অর্থনীতিবিদকে টেনে আনাতেও নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। 

অমর্ত্য সেন ঘোষিত বিজেপি বিরোধী। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে তাঁর পর্যেবক্ষণ ছিল, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। পিটিআই-এর সাম্প্রতিক সাক্ষাত্‍কারেও বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনীতির সমালোচনা করেছেন। এই বিভেদ, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলতে অমর্ত্য বিজেপিকেই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আবার অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোভিড সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁকে ওই আসনে বসিয়েছিলেন। তাই এই দুই অর্থনীতিবিদের মতামত জানতে চেয়ে আসলে পরোক্ষে তৃণমূলকেই নিশানা করেছেন বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ।