মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার আগে পড়ুয়াদের ‘নষ্ট’ বিরিয়ানি! ব্যবস্থা মমতার

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সভায় যাওয়ার আগে দেওয়া বিরিয়ানি (Biriyani) পড়ে ডাস্টবিনে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির (Siliguri) কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সভা। সেই সভায় যাবে খুদে পড়ুয়ারা। কিন্তু তাদের তো আর খালি পেটে পাঠানো যায় না। তাই বন্দোবস্ত হয়েছিল বিরিয়ানির (Biriyani)। কিন্তু সেই বিরিয়ানি একবার মুখে নিয়েই মুখ ব্যাজার কচিকাঁচাদের। বিরিয়ানি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই বিরিয়ানি না খেয়েই সভায় গেল শিলিগুড়ির একটি স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা। পরে নিজে জানতে পেরে সভামঞ্চ থেকেই সেই পড়ুয়াদের খাবারের ব্যবস্থা করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। 

মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল যে সব স্কুলের পড়ুয়াদের, সকালেই শিলিগুড়ির সেই সব স্কুলে পৌঁছে যায় খাবার। প্রশাসনের উদ্যোগেই সেই খাবার পাঠানো হয়। তেমনই খাবার আসে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলেও। তাতে ছিল প্যাকেট করা বিরিয়ানি। বিরিয়ানি খেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার উত্তেজনা ছিল পড়ুয়াদের মধ্যেও। কিন্তু তাতে ছেদ পড়ল বিরিয়ানি মুখে পড়ার পর। গরমে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সে বিরিয়ানি। কয়েকজন মুখে নেওয়ার পরই সে খবর রটে যায় স্কুলে। তার পর কচিকাঁচারা আর সে খাবার খায়নি। 

পড়ুয়াদের কারও বক্তব্য, ‘‘খাবার মুখে দিতেই দেখি কেমন একটা গন্ধ। তাই প্রথমবার খাওয়ার পর আর খাইনি। ফেলে দিয়েছি।’’ আরেক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘বিরিয়ানি খাওয়ার মতো ছিল না। আমরা কেউ একবার খেয়েই ফেলে দিয়েছি। কেউ গন্ধ শুঁকেই আর মুখে তুলিনি।’’ শেষ পর্যন্ত সব বিরিয়ানির প্যাকেট ফেলে দেওয়া হয় স্কুলের সামনে রাখা ডাস্টবিনে। দুপুরের দিকে স্কুলে দেখা যায় ডাঁই হয়ে ডাস্টবিনে জমে রয়েছে ওই বিরিয়ানি। শেষ পর্যন্ত কার্যত খালি পেটেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হন পড়ুয়ারা। 

শিলিগুড়ি বয়েজ স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা পুর নিগমের মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এমন ঘটনার কথা শুনিনি। যদি হয়ে থাকে, ইচ্ছে করে তো কেউ করবে না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য খোঁজ পেয়েছিলেন আগেই। তাই সভায় বক্তৃতার মাঝে হঠাৎই তাঁকে পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘খিদে পেয়েছে’’। পড়ুয়ারাও এক সঙ্গে বলে ওঠে ‘হ্যা’। তখন মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ওই পড়ুয়াদের জন্য় প্যাকেট খাবারের বন্দোবস্ত করতে। মঞ্চ থেকে জেলাশাসক তখনই নেমে তড়িঘড়ি ছোটেন খাবারের ব্যবস্থা করতে। 

কিন্তু প্রশ্ন হল, এত খাবার নষ্ট কেন হল? কার দোষে হল? খুদে পড়ুয়ারা একটু কষ্ট করে খালি পেটে সভায় গেলেও পরে তাঁদের না হয় খাবারের বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু যাঁর বা যাঁদের গাফিলতিতে খাবার নষ্ট হয়েছে, তাঁদের কি চিহ্নিত করার চেষ্টা হবে? বা চিহ্নিত হলেও কি শাস্তির ব্যবস্থা হবে?