নতুন দল গড়েছেন প্রণব, মমতা, সোমেন, নওশাদরা। হুমায়ুনের জনতা উন্নয়ন পার্টির ভবিষ্যৎ কী?

হুমায়ুন কবীরের নতুন দলের ভবিষ্যৎ কী? নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রণব মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সোমেন মিত্র। নওশাদ সিদ্দিকী। হুমায়ুন কবীর। কোথায় মিল এবং অমিল তা আন্দাজ করা কঠিন নয়। কার ভবিষ্যৎ কী, তাও জানা। তবু একবার স্মরণ করা যাক। হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) নতুন দল জনতা উন্নয়ন পার্টি (JUP) গঠন করার পর ইতিহাসে নজর দিয়ে দেখা যাক, পশ্চিমবঙ্গে দল ছেড়ে নতুন দল গঠনের ভূত-ভবিষ্যৎ। 

প্রণববাবুর রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস

১৯৮৬ সাল। রাজীব গান্ধীর (Rajib Gandhi) নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে চরম মতপার্থক্য। দল ছাড়লেন প্রণব মুখোপাধ্যায় (Pranab Mukherjee)। গঠন করলেন রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস (Rashtriya Samajwadi Congress)। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তুখোর রাজনীতিবিদ প্রণববাবু বুঝে গেলেন, সাংগঠনিক দুর্বলতা, জনভিত্তির অভাব এবং তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতায় টিকে থাকা কার্যত অসম্ভব। জাতীয় রাজনীতি দূর অস্ত, পশ্চিমবঙ্গের মাটিতেও তেমন দাগই কাটতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৩ বছর পর ১৯৮৯ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় আবার কংগ্রেসে ফিরে যান। পরবর্তীকালে প্রণববাবু সেই কংগ্রেসে থেকেই বিদেশ, অর্থমন্ত্রী থেকে শেষে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন।

সোমেন মিত্রের প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস

২০০৮ সাল। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিরাট এক সন্ধিক্ষণ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুটি জেলা পরিষদ দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ৩ দশকের বাম শাসনের বিদায়ঘণ্টা হয়তো তখনই বেজে গিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এমনই এক সন্ধিক্ষণে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করে বসলেন সোমেন মিত্র (Somen Mitra)। যিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থেকেছেন দীর্ঘদিন, কলকাতার মেয়র ছিলেন। নিজেকে ইন্দিরার ভাবধারার রাজনীতিবিদ বলে বরাবর বলে এসেছেন। সেই সোমেন মিত্র দলের নাম দিলেন প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস। তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি এবং রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে কীভাবে রাজনৈতিক লড়াই করা হবে, তা নিয়ে মতবিরোধের জেরেই কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়েন সোমেন। কিন্তু বাস্তবে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস রাজ্য রাজনীতিতে বড় কোনও সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে তুলতে পারেনি। মূলত সোমেন মিত্রের ব্যক্তিগত প্রভাব ও কিছু অনুগামী নেতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসে ফিরে আসেন। ওই বিধানসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় অধ্যায়। কারণ ২০১১ সালের ভোটেই ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ওই ভোটে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের জোট হয়েছিল। তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন সোমেন মিত্র। কিন্তু এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা সোমেন মিত্র কার্যত রাজনীতির ময়দান থেকেই ধীরে ধীরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান। 

নওশাদ সিদ্দিকীর ISF

জানুয়ারি, ২০২১। পশ্চিমবঙ্গে আরও একটি নতুন দল। নওশাদ সিদ্দিকীর (Naushad Siddiqui) নেতৃত্বে গঠিত হল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ (ISF)। নওশাদ সিদ্দিকী ফুরফুরা শরিফের প্রভাবশালী পীরজাদা পরিবারের সদস্য। তাঁর কাকা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে ধর্মীয় ও সামাজিক ইস্যুতে সরব ছিলেন। মূলত ফুরফুরা শরিফকেন্দ্রিক সামাজিক প্রভাব এবং সংখ্যালঘু আবেগকে কাজে লাগাতেই দলের আত্মপ্রকাশ। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আইএসএফ সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে তোলার মাধ্যমে। এই জোটকে তখন “সংযুক্ত মোর্চা” বলা হয়। আইএসএফ প্রথমবার নির্বাচনে লড়াই করেই উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায়—নওশাদ সিদ্দিকী নিজে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। এটি ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি বড় ধাক্কা, কারণ ভাঙড় ছিল তাদের শক্ত ঘাঁটি। তবে ওই পর্যন্তই। ভাঙড়ের বাইরে আইএসএফ-এর কার্যত কোনও প্রভাব নেই। 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস 

১ জানুয়ারি, ১৯৯৮। ব্যাতিক্রম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নব্বইয়ের দশকে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে কংগ্রেস নেতৃত্ব ব্যর্থ—এই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য, রাজ্য কংগ্রেসের সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াইয়ের প্রশ্নে সংঘাত চরমে ওঠে। ১৯৯৭ সালের শেষ দিকে কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের একাংশ নেতা-কর্মী, যাঁরা মনে করতেন, বাংলায় আলাদা একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক দল ছাড়া বামফ্রন্টকে হটানো সম্ভব নয়। তারপরই তৃণমূল কংগ্রেস গঠন এবং দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন ইতিহাস লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে এখনও তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। 

চুম্বকে প্রথম ৩ জনের ক্ষেত্রে সারকথা, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, আবেগ বা দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও নতুন দল গড়ে তোলা এবং তা টিকিয়ে রাখা কতটা কঠিন। অথচ সেই কঠিন কাজটাই করে দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাও কার্যত একার কৃতিত্বে। 

হুমায়ুনের জনতা উন্নয়ন পার্টি

পঞ্চম অধ্যায় লিখলেন হুমায়ুন কবীর। বা বলা ভাল লিখবেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ। হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করল জনতা উন্নয়ন পার্টি (জেইউপি)। রেজিনগরে বাবরি মসজিদের জায়গাতেই সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হল নতুন দলের। আত্মপ্রকাশের স্থান নির্বাচন থেকেই স্পষ্ট, শুরু থেকেই একটি রাজনৈতিক বার্তা দিতে চেয়েছেন হুমায়ুন—যা শুধুমাত্র সংগঠন ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পরিচয়ের রাজনীতি, ধর্মীয় সংবেদনশীলতা এবং ক্ষমতার প্রতীকী প্রদর্শনের সঙ্গেও যুক্ত।

বহু বিতর্কে হুমায়ুন 

হুমায়ুন কবীর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন মুখ নন। মুর্শিদাবাদ-কেন্দ্রিক রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকা এই নেতা বিভিন্ন সময় নানা বিতর্ক ও আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছেন। কেটে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া, ৭০%-৩০%-এর ফর্মুলা, বারবার দলবদল ইত্যাদি নানা বিতর্কে জড়ানোর শেষে এবার নিজের দল। মূলস্রোতের রাজনীতিতে সরাসরি অংশগ্রহণ। ঘোষিত লক্ষ্য—উন্নয়ন, বঞ্চিত মানুষের অধিকার এবং ‘সত্যিকারের জনতার রাজনীতি। রাজনীতির এই সব চেনা শব্দ শুনতে খুবই ভাল। বক্তৃতাতেও হাততালি পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ কতটা আলাদা হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে হুমায়ুনের মতো রাজনীতিবিদ, যাঁর স্থিরতা, বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। বিশেষ করে বারবার দলবদলের কারণে।

হালে কতটা পানি পাবে? 

দলের আত্মপ্রকাশের সভায় হুমায়ুন কবীর রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকেই আক্রমণ করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে সংখ্যালঘু সমাজের নিরাপত্তাহীনতা, উন্নয়নের অসম বণ্টন, প্রশাসনিক বৈষম্য এবং স্থানীয় নেতৃত্বের দুর্নীতির অভিযোগ। তিনি দাবি করেন, জনতা উন্নয়ন পার্টি কোনও ‘বি-টিম’ নয়, বরং মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা থেকেই এই দলের জন্ম। কিন্তু প্রশ্ন হল, নতুন দলের ভবিষ্যৎ বিচার করতে গেলে আবেগ বা বক্তব্যের চেয়েও বাস্তব কাঠামোর দিকে নজর দেওয়া জরুরি। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বর্তমানে তীব্রভাবে মেরুকৃত—একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক আধিপত্য, অন্যদিকে বিজেপির বিরোধী শক্তি হিসেবে ক্রমাগত প্রচেষ্টা। এই দুই শক্তির মাঝে নতুন কোনও দল জায়গা করে নিতে পারবে কি না, তা নির্ভর করবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর।

সংগঠন: জনতা উন্নয়ন পার্টির এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে শক্তিশালী সংগঠন নেই। দলের পরিচিত মুখ মূলত হুমায়ুন কবীর নিজেই। তবে আছে বাবরি মসজিদ আবেগ। আবেগে টগবগ করে ফুটছে মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ। কিন্তু আবেগ আর ক্ষণে ক্ষণে চরিত্র বদলানো রাজনীতির রুক্ষ মাটিতে ফসল ফলানো অনেক পার্থক্য। ২০০৮, ০৯ এমনকি ২০১০ সালেও বামেদের ব্রিগেডের জনসভা দেখে কেউ ভেবেছিল, যে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খড়কুটোর মতো উড়ে যাবে বামেরা। এবং সেখান থেকে এখন তো কার্যত নিশ্চিহ্ন। এখন এই বাবরি আবেগ কতদিন ধরে রাখতে পারেন হুমায়ুন, বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আবেগকে কতটা ভোটে পরিণত করতে পারবেন, তা সময় বলবে। 

নেতৃত্ব: একক নেতৃত্ব নির্ভর রাজনীতি স্বল্পমেয়াদে নজর কাড়লেও দীর্ঘমেয়াদে দলকে টিকিয়ে রাখতে জেলা ও ব্লক স্তরে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলা অপরিহার্য। হুমায়ুনের ক্ষেত্রে অবশ্য সবে দল গঠন হয়েছে। ৯ জন প্রার্থীও ঘোষণা করে দিয়েছেন। যদিও সেই প্রার্থীদের মধ্যে হুমায়ুন নিজে ছাড়া দাগ কাটার মতো কত জন আছেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের মনেই। প্রশ্ন উঠছে—দল কি শুধুই একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্ল্যাটফর্ম হয়ে থাকবে, নাকি তা একটি কাঠামোবদ্ধ রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে? 

ভোটব্যাঙ্কের বাস্তবতা: মুর্শিদাবাদ, মালদহ বা উত্তর দিনাজপুরের মতো সংখ্যালঘু-প্রধান জেলাগুলিতে জনতা উন্নয়ন পার্টি কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই অঞ্চলগুলিতেও তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন ও ভোটব্যাঙ্ক এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী। সেখানে নতুন দল কতটা ভোট কাটতে পারবে, তা নির্ভর করবে স্থানীয় স্তরের নেতাদের দলবদল এবং মানুষের আস্থার ওপর।

২০২৬-এর ভোট: এই নির্বাচনকে সামনে রেখে জনতা উন্নয়ন পার্টি কতটা প্রস্তুতি নিতে পারে, সেটাই তাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব নির্ধারণ করবে। বাস্তবসম্মতভাবে দেখলে, ২০২৬-এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসা এই দলের লক্ষ্য নয়। তবে তারা যদি নির্দিষ্ট কিছু আসনে প্রভাব ফেলতে পারে বা ফলাফলে ব্যবধান কমাতে সক্ষম হয়, তাহলেও তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হবে। বিশেষ করে ত্রিমুখী লড়াইয়ের পরিস্থিতিতে নতুন দল ‘ভোট কাটুয়া’ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।

কাদের ক্ষতি করবে? 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, হুমায়ুনের দল কাদের ক্ষতি কবে? জনতা উন্নয়ন পার্টি যদি মূলত সংখ্যালঘু ভোটে প্রভাব ফেলে, তবে তা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দলের বারবার জয়ের অন্যতম ভোটব্যাঙ্ক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ফলে তাঁরা হুমায়ুনের দিকে ঝুঁকলে বিপদ হতে পারে তৃণমূলের। আর তার পরোক্ষ সুফল পেতে পারে বিজেপি, যদি ভোট ভাগ হয়ে যায়। যদিও হুমায়ুন কবীর প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক অঙ্কে শেষ পর্যন্ত ফলাফলই সবচেয়ে বড় সত্য।

সব মিলিয়ে বলা যায়, জনতা উন্নয়ন পার্টির ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। তবে একেবারে গুরুত্বহীন নয়। ২০২৬ সালের নির্বাচনে তারা হয়তো রাজ্যের রাজনীতির চালক শক্তি হয়ে উঠবে না, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে ‘ফ্যাক্টর’ হতে পারে। দলের সাফল্য নির্ভর করবে সংগঠন বিস্তার, স্পষ্ট রাজনৈতিক রূপরেখা এবং প্রতীকী রাজনীতির বাইরে গিয়ে বাস্তব সমস্যার সমাধানে কতটা বিশ্বাসযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে তার ওপর। 

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন এই যাত্রা শেষ পর্যন্ত কতটা দাগ কাটবে, তা আপাতত সময়ই গর্ভো। তবে হুমায়ুন কবীর এবং তাঁর দল জনতা উন্নয়ন পার্টি যে বঙ্গ রাজনীতিতে একটা ঢেউ তুলেছে, তা এখনই বলে দেওয়া যায়। হুমায়ুনের পরিণতিও প্রণববাবু বা সোমেনবাবুর মতো হয় কিনা, নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মতো হয়, অথবা নতুন কোনও ধারার জন্ম দেয়, তার উত্তর দেবে সময়।