আবার অভিষেকের বিদেশযাত্রা নিয়েও সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। মামলা চলাকালীন কীভাবে বিদেশে যেতে পারেন এবং সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। যদিও তৃণমূল সূত্রে দাবি, সব অনুমতি নিয়েই চিকিৎসার জন্য় বিদেশে গিয়েছেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, ২০ আগস্ট দেশে ফেরার কথা অভিষেকের।
সাধারণ নাগিরকের মতো বিমানে
বুধবার বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, দুবাইয়ের বিমান ধরেছেন। সেখান থেকে আমেরিকায় যাওয়ার কথা। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে আবার খবর, এক্কেবারে সাধারণ যাত্রীর মতো গিয়েছেন অভিষেক। তাঁর সঙ্গে যে নিরাপত্তার বহর থাকে, বুধবার তার কিছুই ছিল না। ভিআইপি গেট দিয়েও ঢোকেননি। সাধারণ যাত্রীর গেট দিয়ে ঢুকেছেন এবং চেক-ইন করে বিমানে উঠেছেন।
মামলা নিষ্পত্তি হয়নি
এখন প্রশ্ন হল, অভিষেকের ক্ষত্রে এই সংক্রান্ত মামলা ঝুলে রয়েছে। গত সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের অন্য মামলায় সুপ্রিম কোর্টে মেনশন করেছেন অভিষেকের আইনজীবী কপিল সিব্বল। কিন্তু ওই দিন ইডির আইনজীবী সময় চেয়ে নেন। শুক্রবার পর্যন্ত সেই সময় মঞ্জুর করে আদালত। শুক্রবার ফের মামলার শুনানি।
মামলা নিষ্পত্তির আগেই কীভাবে বিদেশে?
ফলে অভিষেকের বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কীভাবে তিনি বিদেশে যেতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কপিল সিব্বল শীর্ষ আদালতে দাবি করেন, ২৬ জুলাই অভিষেক বিদেশে যেতে চান, এই মর্মে অনেক আগেই ইডিকে জানানো হয়েছে এবং অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ৮ আগস্ট চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে, সে কথাও জানানো হয়েছে। তার পরও ইডির তরফে কিছু জানানো হয়নি। সেই মামলায় বিচারপতি মন্তব্য করেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অধিকার যে কারও আছে। যদিও মামলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি বিচারপতি। শুক্রবার শুনানির পর এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারে আদালত। অন্য দিকে ইডিকে পাঠানো অভিষেকের চিঠির উত্তরে ইডিও কিছু জানায়নি। অর্থাৎ হ্যাঁ বা না কোনওটাই জানায়নি।
সেটিং তত্ত্ব বিরোধীদের!
তৃণমূল সূত্রে যদিও দাবি করা হয়েছে, অভিষেক সব পক্ষকে জানিয়ে এবং অনুমতি নিয়েই বিদেশে গিয়েছেন। তবে তৃণমূল-বিজেপি সেটিংয়ের তত্ত্বে সরব বাম কংগ্রেস। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, অভিষেক আসলে ইডির অনুমতি নয়, মোদীর অনুমতি নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন। সুর মিলিয়েছে কংগ্রেসও। যদিও বিজেপির দাবি, বিষয়টি বিচারাধীন। তদন্তকারী সংস্থা এবং আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বাড়ি ঘেরাওয়ের কী হবে?
প্রশ্ন হল, ৫ আগস্ট তৃণমূলের কর্মসূচির কী হবে? কর্মসূচিতে অবশ্য ততটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, অভিষেক দেশে থাকলেও সব জায়গায় যেতে পারতেন না। হয়তো কোনও একটা কর্মসূচিতে গিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গলা মেলাতেন। অথবা জেলার নেতারাই কর্মসূচি পালন করতেন এবং এখনও করবেন। এই মুহূর্তে তৃণমূলের যা সাংগঠনিক শক্তি, তাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এখন শেষ পর্যন্ত এই কর্মসূচি কীভাবে হয়, তার দিকেই নজর রাজ্যবাসীর।