দিদির চারপাশে দুর্বৃত্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে! ফের বিস্ফোরক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিশানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অলঙ্করণ: সুবর্ণরেখা টিম 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: আবার বিস্ফোরক অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করে নজিরবিহীন আক্রমণ শানালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে দিদি শব্দটি ব্যবহার করেছেন। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এদিন আচমকাই তৃণমূলকে আক্রমণ শুরু করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘দিদি একা সামলাতে পারছেন না। দিদির চারপাশে কিছু দুর্বৃত্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’ 

ঘটনাচক্রে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের দুটি পাসপোর্ট পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ। বিচারপতির কথায়, ‘‘মানিক ভট্টাচার্যের দু’টি পাসপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। বিধায়ক পদ এখনও ছাড়েননি। তিনি হয়তো ভাবছেন আবার ফিরে আসবেন। লন্ডনে মানিকের বাড়ির পাশে যাঁর বাড়ি, তিনি নেতা ছিলেন।’’

আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের পকেটে স্বস্তি! আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ৭ লাখ, কত আয়ে কত কর

এই প্রসঙ্গের অবতারণা করে আরও আক্রমণাত্মক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এইভাবে রাজ্যটা নষ্ট হয়ে যাবে। ভূপেন হাজারিকার একটা গান মনে পড়ে যাচ্ছে। হাজার টাকার বাগান খাইল পাঁচ সিকার ছাগলে। ’’ 

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন। তাঁর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে বিরোধীরা। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দলও। আদালতের পর্যবেক্ষণ নিয়ে মন্তব্য না করার কথা বলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘আমার মনে হয়, ওনার একটু ভ্রান্ত ধারনা তৈরি হয়েছে। কেউ পাশে ঘুরছেন না, আসল কারিগর উনিই। মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলন ছাড়া মানিক ভট্টাচার্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলরা এই ধরনের কাজ করতে পারেন না।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর তোপ, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। দুর্নীতিগ্রস্তরাই তৃণমূল বানিয়েছে। সবারই একটা জিনিস কমন, তৃণমূলের নেতা। এটা লুট করার লাইসেন্স।’’

আরও পড়ুন: দেশের সঙ্গে বঙ্গেও হাইড্রোজেন ট্রেন! কী প্রযুক্তি, চলবে কোথায় কোথায়

শাসক দলের নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বিরোধীদের কথায় গুরুত্ব দিতে চাননি। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কী বলব ঠিক বুঝতে পারছি না। উনি যে কী করছেন, কখন কাকে সরিয়ে দিচ্ছেন। এত অসম্মান করা।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘উনি বিচারপতি হতে পারেন। কিন্তু এই ধরনের কথা বলা বলার উনি কে? উনিও যে রায় দিচ্ছেন, তার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন আছে। আদালতে বসে কী বলা যায়, কী বলা যায় না, তার একটা সীমা আছে। বিচারপতিরা কোথায় যেতে পারেন, কোথায় যেতে পারেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আমার অনুরোধ, বিচার ব্যবস্থাকে এভাবে ছোট করবেন না। ’’